নিয়মানুবর্তিতা ।। অনুচ্ছেদ ।। Class 9।।
অনুচ্ছেদ
নিয়মানুবর্তিতা
নিয়মানুবর্তিতা বলতে ব্যক্তি ও সমাজজীবনে নিয়ম মানা, শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং দায়িত্বশীল আচরণের অভ্যাস বোঝায়। এটি মানুষের আচরণকে নিয়ন্ত্রিত ও সুশৃঙ্খল করে তোলে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে চলাই নিয়মানুবর্তিতার মূল ভিত্তি। নিয়মানুবর্তিতা মানুষের চরিত্র গঠনে অনন্য ভূমিকা রাখে। জন্মের পর থেকেই মানুষ পরিবার, বিদ্যালয়, সমাজ এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন নিয়মের মধ্যে বেড়ে ওঠে। এসব নিয়ম তাকে সামাজিক জীবনে সুশৃঙ্খল চলার দিকনির্দেশনা দেয়। একজন শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ সময়মতো পড়াশোনা করা, ক্লাসে উপস্থিত থাকা, পাঠ্যবইয়ের নিয়মিত অনুশীলন—সবই মূলত নিয়মানুবর্তিতার ফল। ইতিহাস প্রমাণ করে সভ্যতার উন্নয়ন এবং রাষ্ট্র পরিচালনার সাফল্যের পেছনে কঠোর শৃঙ্খলা ছিল অদৃশ্য চালিকাশক্তি। কর্মক্ষেত্রে নিয়মানুবর্তিতা মানুষের দক্ষতাকে বাড়িয়ে তোলে, সময় ব্যবস্থাপনা সহজ করে এবং কর্মফলকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে। যে জাতি নিয়ম মানতে পারে, তাদের উন্নয়ন নিশ্চিত হয়; আর যেখানে বিশৃঙ্খলা, সেখানে অগ্রগতি থেমে যায়। পরিবারে বাবা-মা যদি নিয়ম মানার অভ্যাস গড়ে তোলেন, তাহলে সন্তানও একই পথে এগোয়। খেলাধুলায়ও দেখা যায় দলগত সাফল্যের পেছনে থাকে কঠোর অনুশাসন। নিয়মমাফিক প্রশিক্ষণ, শৃঙ্খলাপূর্ণ সমন্বয় খেলোয়াড়দের দক্ষতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা, যানচলাচল, চিকিৎসা ব্যবস্থা—সর্বত্র নিয়ম মানা না হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। আজকের দ্রুতগামী বিশ্বে সময়ের মূল্য অপরিসীম; সময়নিষ্ঠতা নিয়মানুবর্তিতার অন্যতম রূপ। আমরা যখন নিয়ম মানি, তখন নিজের পাশাপাশি অন্যদের জীবনকেও সহজ করি। নিজের দায়িত্ব পালন এবং অপরের অধিকারে সম্মান প্রদর্শন নিয়মানুবর্তিতার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়। সুতরাং নিয়মানুবর্তিতা ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে এক অপরিহার্য গুণ। এটি মানুষকে লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে এবং সমাজকে স্থিতিশীল রাখে। নিয়ম মানার অভ্যাস যত বেশি গড়ে উঠবে, তত বেশি আমাদের জীবন হবে সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও সফল।
No comments
Thank you, best of luck