অনুচ্ছেদ।। বিশ্ববিদ্যালয়।। সপ্তম শ্রেণি।। অষ্টম শ্রেণি।। নবম শ্রেণি-দশম।। এসএসসি।।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত |
বিশ্ববিদ্যালয় হলো উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার এমন এক বাতিঘর, যেখানে জ্ঞানচর্চা, বিতরণ এবং নতুন জ্ঞানের সৃজন হয়। এটি কেবল ডিগ্রি অর্জনের কেন্দ্র নয়, বরং মানবজাতির মেধা ও মননের বিকাশে এক অপরিহার্য প্রতিষ্ঠান। এই জ্ঞানতীর্থে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট বিষয়ে গভীর জ্ঞানার্জনের সুযোগ পায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম মূলত দুটি ধারায় বিভক্ত। অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠিত জ্ঞানের সঙ্গে পরিচিত হয় এবং নির্দিষ্ট বিষয়ে পাণ্ডিত্য অর্জন করে। অন্যদিকে, এমফিল ও পিএইচডি পর্যায়ে গবেষণার মাধ্যমে বিদ্যমান জ্ঞানের সীমানা ছাড়িয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। এই জ্ঞানযজ্ঞে যাঁরা আলো জ্বেলে পথ দেখান, তাঁরা অধ্যাপক এবং যাঁরা নতুন জ্ঞান সৃষ্টিতে মগ্ন থাকেন, তাঁরা গবেষক। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল পরিসর মানবিক, বিজ্ঞান, বাণিজ্য, প্রকৌশল, চিকিৎসাসহ অসংখ্য অনুষদ ও বিভাগে বিভক্ত থাকে, যা শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ আগ্রহের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হওয়ার সুযোগ করে দেয়। ঐতিহাসিকভাবে, প্রাচীন ভারতের নালন্দা ছিল এমনই এক আবাসিক জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র। তবে বিশ্বের প্রাচীনতম চলমান বিদ্যাপীঠ হিসেবে স্বীকৃত মরক্কোর আল কারাওয়াইন বিশ্ববিদ্যালয়, যা ৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার দ্বার উন্মোচিত হয় ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, যা ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ নামে খ্যাতি লাভ করে। বর্তমানে দেশে সরকারি, বেসরকারি, বিশেষায়িত ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে দেড় শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এদের কোনোটি গবেষণাধর্মী, আবার কোনোটি কর্মমুখী শিক্ষাদানে নিবেদিত। একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, বিতর্ক ও মুক্তচিন্তার চর্চা শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। বস্তুত, বিশ্ববিদ্যালয় হলো মুক্তচিন্তার আঁতুড়ঘর। পরিশেষে, বিশ্ববিদ্যালয় শুধু ইট-পাথরের স্থাপনা নয়, এটি একটি আদর্শিক কেন্দ্র। জ্ঞানভিত্তিক, প্রগতিশীল ও নৈতিকতাসম্পন্ন সমাজ গঠনে এর ভূমিকা অবিস্মরণীয়। এটি একটি উন্নত ও টেকসই ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখায় এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথ তৈরি করে।
No comments
Thank you, best of luck