header ads

অনুচ্ছেদ।। স্কুল লাইব্রেরি।। বাংলা দ্বিতীয় পত্র।। ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম-দ্বাদশ শ্রেণি।।

স্কুল লাইব্রেরি

স্কুল লাইব্রেরি হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভুক্ত একটি অপরিহার্য জ্ঞানকেন্দ্র, যেখানে পাঠ্যবইয়ের বাইরে নানা বিষয়ের গ্রন্থ, তথ্য, সাময়িকি ও সাহিত্য-পুস্তক সংরক্ষিত থাকে। এটি বিশেষভাবে গড়ে তোলা হয় ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের জ্ঞানপিপাসা মেটানোর জন্য। প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয়ের নিজস্ব রয়েছে, যা প্রকৃত শিক্ষার বিকাশে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করে। স্কুল লাইব্রেরির গুরুত্ব ও প্রভাব অপরিসীম। এটি শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে জ্ঞানের বিশাল ভাণ্ডারে প্রবেশের সুযোগ করে দেয়। নানা ধরনের বই পড়ে তারা ইতিহাস, বিজ্ঞান, সাহিত্য, ভ‚গোল, সংস্কৃতি, দর্শনসহ বিচিত্র বিষয় স¤পর্কে জানতে পারে। এই বিচিত্র জ্ঞান আহরণ শৈশব থেকেই তাদের মানসিক বিকাশকে ত্বরান্বিত করে, চিন্তার পরিধিকে প্রসারিত করে এবং শিক্ষার প্রকৃত অর্থ ও আনন্দকে উপলব্ধি করতে সাহায্য করে। এটি কেবল তথ্যই দেয় না, গড়ে তোলে বিশ্লেষণী ক্ষমতা ও সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা। স্কুল লাইব্রেরি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য একজন দক্ষ লাইব্রেরিয়ানের ভ‚মিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি লাইব্রেরির সার্বিক দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন। তার কাজের মধ্যে পড়ে উপযুক্ত ও মানস¤পন্ন বই বাছাই করা, সেগুলো সংগ্রহ করা, বইগুলো শ্রেণিবদ্ধ ও সজ্জিত করে রাখা, লাইব্রেরির শৃঙ্খলা ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং ব্যবহারকারীদের প্রয়োজনীয় সাহায্য প্রদান করা। ছাত্রছাত্রীদের নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে লাইব্রেরির সদস্য হতে হয়, সাধারণত একটি ফরম পূরণের মাধ্যমে। সদস্য হওয়ার পর প্রত্যেককে একটি লাইব্রেরি কার্ড দেওয়া হয়। এই কার্ড দেখিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দসই বই একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাড়িতে নিয়ে যেতে পারে। তবে সময়সীমার মধ্যে বইটি সুস্থ অবস্থায় লাইব্রেরিতে ফেরত দেওয়া বাধ্যতামূলক, যাতে অন্যরাও তার সুবিধা পেতে পারে। একটি আদর্শ স্কুল লাইব্রেরির সংগ্রহে থাকে শিশু-কিশোরদের উপযোগী রঙিন ছবির শিশুতোষ বই, উপদেশ ও নৈতিক শিক্ষামূলক গল্প-উপন্যাস, বিশ্ববরেণ্য মনীষীদের জীবনী ও কর্মকাণ্ড, বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সহজবোধ্য বই, সাধারণ জ্ঞানের আপডেট তথ্য সম্বলিত রচনা এবং কালজয়ী সাহিত্যকর্ম বা চিরায়ত গ্রন্থাবলি। বর্তমানে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মতো সংস্থার অগ্রণী উদ্যোগে 'আলোকিত মানুষ চাই' এই মহৎ লক্ষ্যকে সামনে রেখে সারাদেশে স্কুল লাইব্রেরি গড়ে তোলার কার্যক্রম জোরেশোরে চলছে। এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়।  সুতরাং, স্কুল লাইব্রেরি কেবল বই রাখার স্থান নয়; এটি শিক্ষার স¤প্রসারণ, জ্ঞানার্জনের কেন্দ্র এবং আলোকিত মানুষ গঠনের কারখানা। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্বপ্ন দেখতে শেখে, নিজেকে আবিষ্কার করে এবং সভ্যতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার পাথেয় জোগাড় করে। জ্ঞানের আলোয় আলোকিত একটি প্রজন্ম গঠনে স্কুল লাইব্রেরির অবদান তাই চিরস্মরণীয় ও অনুকরণীয়

No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.