অনুচ্ছেদ।। চরিত্র।। বাংলা দ্বিতীয় পত্র।। ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম-দ্বাদশ শ্রেণি।।
চরিত্র
চরিত্র মানবজীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ভ‚ষণ এবং তার মনুষ্যত্বের প্রকৃত পরিচায়ক। এটি মানুষের ভেতরের নৈতিক শক্তি ও সৌন্দর্যের এক উজ্জ্বল প্রতিফলন। এই অমূল্য স¤পদই ব্যক্তিকে সত্যিকারের মর্যাদা ও সম্মান এনে দেয়, যা তাকে প্রকৃত মানুষ করে তোলে। চরিত্রবান ব্যক্তি তার সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও মহৎ গুণাবলির জন্য সমাজে শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস অর্জন করেন। তিনিই সমাজের আলোকবর্তিকা, যার আদর্শ ও কর্মপ্রেরণা জাতিকে উন্নতির পথে চালিত করে। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, সকল মহৎ কাজ ও যুগান্তকারী পরিবর্তন চরিত্রবান মানুষদের হাত ধরেই সাধিত হয়েছে। মানুষের বাহ্যিক সৌন্দর্য বা ধনস¤পদ ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু চরিত্রের সৌন্দর্য অবিনশ্বর; তা মৃত্যুর পরেও মানুষের কীর্তিকে অমর করে রাখে। বিপরীতে, চরিত্রহীনতা এক সামাজিক ব্যাধি। চরিত্রহীন মানুষ অর্থবিত্ত বা ক্ষমতায় যতই শক্তিশালী হোক না কেন, সে সমাজের চোখে ঘৃণিত এবং পরিবারের জন্য কলঙ্কস্বরূপ। দুশ্চরিত্র ব্যক্তি কেবল নিজেরই নয়, পারিপার্শ্বিক পরিবেশকেও কলুষিত করে তোলে। চরিত্র রাতারাতি গঠন করা যায় না, এটি দীর্ঘ সাধনার বিষয়। এর ভিত্তি স্থাপিত হয় শৈশবে। এই সময়ে পরিবার, বিশেষ করে বাবা-মা'র øেহময় শাসন ও সদুপদেশ শিশুর মনে নৈতিকতার বীজ বুনে দেয়। এরপর বিদ্যালয় ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ সেই বীজকে মহীরুহে পরিণত করতে সহায়তা করে। সৎসঙ্গ এবং মহৎ ব্যক্তিদের জীবনী পাঠ চরিত্রকে উন্নত করতে এক শক্তিশালী ভ‚মিকা পালন করে। কিন্তু বর্তমান ভোগবাদী পৃথিবীতে নৈতিকতার সেই দৃঢ় ভিত্তি আজ টলমল। অর্থ ও ক্ষমতার মোহে মানুষ তার চরিত্রের মহিমাকে বিসর্জন দিয়ে অনৈতিকতার অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে। এই সংকটময় মুহূর্তে নতুন প্রজন্মকে চরিত্রের অমিত শক্তি নিয়ে জেগে উঠতে হবে। কেবলমাত্র বাহ্যিক উন্নতি নয়, আত্মিক ও নৈতিক জাগরণই পারে একটি সুন্দর সমাজ গড়তে। চরিত্র নামক এই শাশ্বত অলংকারই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পথকে উজ্জ্বল ও সাফল্যমÐিত করবে।
No comments
Thank you, best of luck