header ads

বাংলা দ্বিতীয় পত্র; ব্যাকরণিক শব্দ শ্রেণি।। ক্রিয়া বলতে কী বোঝোয়? উদাহরণসহ ক্রিয়ার শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করো। নবম-দশম।। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি।।

ক্রিয়া বলতে কী বোঝোয়? উদাহরণসহ ক্রিয়ার শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করো। 

ক্রিয়া - বাক্যের প্রাণ, ভাষার গতিশীলতা
বাংলা ভাষার অলংকারশাস্ত্রে ব্যাকরণ একটি মজবুত ভিত্তি তৈরি করে। আর এই ব্যাকরণের অন্যতম স্তম্ভ হলো ক্রিয়া। শব্দের সৌন্দর্য, বাক্যের গঠন, ভাবের প্রকাশ – সবকিছুর মূলে রয়েছে এই ক্রিয়াপদ। "রিয়া বই পড়ে", 
"পাখি আকাশে উড়ছে", 
"মা সুস্বাদু খাবার রান্না করছেন" – প্রতিটি বাক্যে যে শব্দটি না থাকলেই বাক্যটি অর্থহীন হয়ে পড়ে, সেটিই হলো ক্রিয়া। এটি কেবল একটি শব্দ নয়, বরং বাক্যে সংঘটিত হওয়া কোনো কাজ, অবস্থা, ঘটনা বা অস্তিত্বকে নির্দেশ করে, বাক্যকে সম্পূর্ণতা দেয় এবং এর গতিশীলতা তৈরি করে।

ক্রিয়া ছাড়া আমরা আমাদের চিন্তা, অনুভূতি বা দৈনন্দিন জীবনের কর্মকাণ্ডের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা দিতে পারি না। এটি ভাষাকে প্রাণবন্ত করে তোলে। কিন্তু ক্রিয়া বলতে আসলে কী বোঝায়? আর এই ক্রিয়াপদগুলোই বা কত রকমের হতে পারে? কীভাবে আমরা কর্মের উপস্থিতি-অনুপস্থিতি, কাল (সময়) বা প্রকৃতি অনুযায়ী ক্রিয়াকে শ্রেণিবদ্ধ করব?

এই ব্লগ পোস্টে আমরা বাংলা ব্যাকরণের এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টির গভীরে যাবো: 
ক্রিয়ার সংজ্ঞা: সহজ ভাষায় ও উদাহরণের মাধ্যমে ক্রিয়া কী, তা বোঝার চেষ্টা করব।

ক্রিয়ার শ্রেণিবিভাগ: কর্মের ভিত্তিতে (সকর্মক, অকর্মক, দ্বিকর্মক), কালের ভিত্তিতে (বর্তমান, অতীত, ভবিষ্যৎ), ও প্রকৃতি/গঠনের ভিত্তিতে (সমাপিকা, অসমাপিকা, নামধাতুরূপ, মৌলিক, সাধিত) ক্রিয়াকে কীভাবে ভাগ করা যায়, তা বিস্তারিত আলোচনা করব।


উদাহরণ: প্রতিটি শ্রেণি ও উপশ্রেণিকে পরিষ্কার করতে প্রচুর সহজ-সরল বাংলা উদাহরণ উপস্থাপন করব।

উত্তর: যে শব্দশ্রেণি দ্বারা কোনো কিছু করা, ঘটা, হওয়া ইত্যাদি বোঝায় তাকে ক্রিয়া বলে।
যেমন—সে হাসছে। বাগানে ফুল ফুটেছে।
এবার বৃষ্টি হবে।
নানা মানদণ্ডে ক্রিয়াকে বিভক্ত করা যায়। যথা—
ভাব প্রকাশের দিক দিয়ে ক্রিয়াপদ ২ প্রকার। যথা- 
সমাপিকা 
অসমাপিকা 

ক. সমাপিকা ক্রিয়া : যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের ভাবের পরিসমাপ্তি ঘটে।
যেমন—ছেলেরা বল খেলছে।

খ. অসমাপিকা ক্রিয়া : যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের ভাবের পরিসমাপ্তি ঘটে না।
যেমন—আমি বাড়ি গিয়ে ভাত খাব।



কর্মপদ সংক্রান্ত ভূমিকা অনুসারে:
ক. অকর্মক ক্রিয়া : বাক্যের অন্তর্গত যে ক্রিয়া কোনো কর্ম গ্রহণ করে না, তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে।
যেমন—সুমন খেলছে।
খ. সকর্মক ক্রিয়া : বাক্যের অন্তর্গত যে ক্রিয়া মাত্র একটি কর্ম গ্রহণ করে, তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন—অনি বাগান থেকে ফুল তুলছে।
গ. দ্বিকর্মক ক্রিয়া : বাক্যের অন্তর্গত যে ক্রিয়া দুটি কর্ম গ্রহণ করে, তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে।
যেমন—মুন্নি মাসুমকে একটি কলম দিয়েছে।
ঘ. প্রযোজক ক্রিয়া : কর্তার যে ক্রিয়া অন্যকে দিয়ে করানো হয়, তাকে প্রযোজক বা নিজন্ত ক্রিয়া বলে।
যেমন—মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন।
গঠন বৈশিষ্ট্য অনুসারে :
ক. যৌগিক ক্রিয়া: একটি সমাপিকা ও একটি অসমাপিকা ক্রিয়া যদি একত্রে একটি বিশেষ বা সম্প্রসারিত অর্থ প্রকাশ করে, তবে তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে। যেমন—ধরে ফেলছে, উঠে পড়ছে, নেমে পড়েছে, খেয়ে ফেলেছে ইত্যাদি।
খ. সংযোগমূলক ক্রিয়া : বিশেষ্য, বিশেষণ ও ধনাত্মক শব্দের সাথে সমাপিকা ক্রিয়া যোগ করে যে ক্রিয়া গঠিত হয়, তাকে সংযোগমূলক ক্রিয়া বলে। যেমন—নাচ করা, গান গাওয়া, মশা মারা, ছেলে ধরা ইত্যাদি।
স্বীকৃতি অনুসারে :
ক. অস্তিবাচক ক্রিয়া : যে ক্রিয়া দ্বারা অস্তিবাচক বা হ্যাঁ-বোধক অর্থ প্রকাশ পায়, তাকে অস্তিবাচক ক্রিয়া বলে।
যেমন—সীমা এসেছে।
খ. নেতিবাচক ক্রিয়া : যে ক্রিয়া দ্বারা নেতিবাচক বা না-বোধক অর্থ প্রকাশ পায়, তাকে নেতিবাচক ক্রিয়া বলে।
যেমন—রিমা আসেনি।

No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.