ads

ভাব-সম্প্রসারণ: অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে।


অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে
তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে। -ভাবসম্প্রসারণ করো। 

ভাবসম্প্রসারণ: 
যে ব্যক্তি অন্যায় করে ও যে ব্যক্তি সেই অন্যায় চুপচাপ সহ্য করে, উভয়ে সমান অপরাধী। নীরবতা কিংবা সহমর্মিতা অপরাধীকে অপরাধের পথে বাধাহীন চলার সুযোগ করে দেয়। তাই এই দু’ধরনের ব্যক্তিই সমাজে সমান অপরাধী উভয়ে সমান ঘৃণার পাত্র।

সমাজে আমরা প্রায়ই দেখি, কেউ প্রকাশ্যে অন্যায় করছে; দুর্নীতি, অনাচার, নির্যাতন চলছে; আর আশেপাশের মানুষ নির্লিপ্ত দৃষ্টিতে তা দেখছে। তারা ভাবে, "আমার কী!" অথচ এই নির্লিপ্ততা ক্রমে অন্যায়কে এমন ভয়ঙ্কর রূপ দেয় যে, একদিন তা নিরীহকেও গ্রাস করে। উদাহরণ সরূপ বলা যায়, কোনো স্কুলে একদল শিক্ষার্থী দুর্বল সহপাঠীদের উপর প্রতিদিন নির্যাতন চালায়, আর শিক্ষক বা অন্য বন্ধুরা যদি তা জেনে চুপ থাকে, তবে নির্যাতনকারীরা আরও সাহস পায়। যদি প্রথম দিন থেকেই কেউ প্রতিবাদ করত, অন্যায়কারীর শাস্তি নিশ্চিত করত, তবে হয় তো এমন ঘটনা ঘটত না। বাস্তবে, অন্যায় ঘটার পর যখন কেউ দাঁড়িয়ে যায়, তখন তা শুধু প্রতিবাদ নয়, সমাজের বিবেককে জাগিয়ে তোলে। ইতিহাসের পাতা খুললে দেখি, মহান ব্যক্তিরা কখনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করেননি। মহাত্মা গান্ধী, নেলসন ম্যান্ডেলা, আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ইতিহাস বদলে দিয়েছেন। তাই অন্যায় দেখেও নীরব থাকা মানে, নিজ হাতে অন্যায়কে পুষে বড়ো করা। একসময় এই প্রশ্রয়প্রাপ্ত অন্যায় সমাজকে গ্রাস করে, ন্যায়-নীতির সব আলো নিভিয়ে দেয়। তাই অন্যায়কে না বলা এবং তা সহ্য না করার চেতনা আমাদের চরিত্রের অন্যতম অঙ্গ হওয়া উচিত।

সমাজকে অন্যায়মুক্ত করতে চাইলে শুধু অন্যায়কারীকে দমন করলেই হবে না; নীরব সহনশীলতাকেও সমান গুরুত্ব দিয়ে প্রতিহত করতে হবে। প্রত্যেকের মনে ন্যায়ের দীপ্তি জাগাতে হবে, যাতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অগ্নিশিখা কখনোই না নেভে। ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভ‚মিকা গ্রহণ করাই হলো মানবিক দায়িত্ব ও প্রকৃত সভ্যতার চিহ্ন।






No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.